রেজাউল মোহিত খানের মহানুভবতা: ষাটোর্ধ্ব ৪ ভিখারীনীসহ অন্যরা পেলেন ৬ লাখ টাকা

জীবন আহমেদ লিটন : ষাটোর্ধ্ব ৪ বিধবা ভিখারীনির মহিলার উপজেলার দুর্গম এলাকা গাগড়াকোনা সড়কের ঝুপড়িতে বসবাস। তাদের মানবেতর জীবন যাপন নিয়ে অনেকবার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। বিষয়টি নজরে নিয়ে ঈদের ঠিক ২ দিন আগে ওই ৪ ভিখারিনীকে খোঁজে বের করে তাদের হাতে নগদ টাকা তুলে দিলেন বানিয়াচং তথা হবিগঞ্জ জেলার পরিচ্ছন্ন অমায়িক ও বিনয়ী ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খান। বয়সের ভারে নুয্য ভিখারিনীরা নগদ টাকা হাতে পেয়ে আনন্দে কেঁদে উঠলেন। তারা বলেন জীবনে এই প্রথম ঈদের আগে কেউ নগদ টাকা দান করলেন। সাথে সাথে উনারা রেজাউল মোহিত খান ও তার পরিবারের সদস্যদের জন্য আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন।

একটি পঙ্গুক্তি দিয়ে এ মহান দানবীরকে সংক্ষিপ্তভাবে তোলে ধরার চেষ্টা‘ পরের কারণে স্বার্থ দিয়ে বলি এ জীবন মন সকলি দাও, তার মত সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভুলিয়া যাও’ কবি কামিনী রায় এর এ কথাটির যথার্থ ব্যক্তি হচ্ছেন আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খান। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পবিত্র ঈদ উপলক্ষে গরীব আলেম-উলামা, দু:স্থ ও অসহায় মানুষসহ নিম্নবিত্ত এবংনিম্ন মধ্যবিত্তদের মাঝে প্রায় ৬ লাখ টাকা বিতরণ করেছেন তিনি। সাধারণ মানুষ যখন কোভিড-১৯ এর কারণে কর্ম হারিয়ে নি:স্ব তখন এ দু:সময়ে এ মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নগদ অর্থ পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। এতে করে সাধারণ মানুষজন বেজায় খুশি এ মানুষটির উপর।

আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খান হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়ন এর অন্তর্গত যাত্রাপাশা মহল্লার ঐতিহ্যবাহী বড় বাড়ির সন্তান। তাঁর পিতার নাম মরহুম আলহাজ্ব আব্দুস শহীদ খান। তিনিও ছিলেন একজন সামাজিক ন্যায় বিচারক এবং শিক্ষানুরাগী। আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খান কোমল হৃদয়ের একজন ন্যায়পরায়ণ দানশীল ব্যক্তিত্ব। তিনি সমাজে অত্যন্ত সজ্জন ও ভদ্রজন হিসেবে পরিচিত।

যার খ্যাতির ব্যাপ্তি জেলাসহ দেশ এবং বিদেশেও। এ মানুষটি সমাজের অনেক সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি এবং তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিশাল অঙ্কের টাকা সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের কল্যাণে বিতরণ করেছেন। করোনার প্রথমার্থে হবিগঞ্জ শহরে মালিকানাধীন রূপালী ম্যানশনের ব্যবসায়ীদেরকে ভাড়াবাবত ২ লাখ টাকা মওকুফ করেছিলেন তিনি। এভাবেই তিনিসহ এ পরিবারের মানুষ সমাজ এবং মানুষের দু:সময় অথবা যে কোন সময়ে বিনাদ্বিধায় পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

ক্যান্সার আক্রান্ত এক জনৈক মহিলা এ প্রতিনিধিকে জানান, অনেক দিন ধইরা ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে গিয়া অহন আর খাইবারও ট্যাহা নাই। উনার ট্যাহাটা পাইয়া ভাবছি কিছুটা ওষুধ কিনমু। শ্রমজীবি বশির আহমদ জানান, কিতা কইতাম ৩ মাস ধরাই কোন কামকাজ নাই। পরিবার-পরিজন নিয়া বড় কষ্টে আছি। এ ট্যাহাটা পাইয়া ভাবছি ঈদে মাইয়ারেকে কাপড় কিন্নিয়া দিমু আর আল্লাহর কাছে দোয়া করমু রেজাউল ভাইসাবের জন্য।

আলহাজ্ব রেজাউল মোহিত খান অনেক সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে প্রতিনিয়ত জনহিতকর কাজ করে যাচ্ছেন। যা এক কথায় বিরল। আজীবন সদস্য, মার্চেন্ট এসোসিয়েশন হবিগঞ্জ, জালালাবাদ এসোসিয়েশন ঢাকা ও ডায়াবেটিক সমিতি হবিগঞ্জ। সহসভাপতি- হবিগঞ্জ প্রাইভেট হাসপাতাল ঔর্নাস এসোসিয়েশন ও বায়তুল আমান জামে মসজিদ। আজীবন সদস্য বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি হবিগঞ্জ।

চেম্বার অব কমার্সের সদস্য, আজীবন সদস্য লন টেনিস ক্লাব হবিগঞ্জ। সভাপতি- গ্যানিংগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, বানিয়াচং ও সত্ত¡াধিকারী রূপালী ম্যানশন হবিগঞ্জ এবং সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- তরঙ্গ টোয়েন্টিফোর ডটকম। এ ছাড়াও তিনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে নিজেক সম্পৃক্ত থেকে দেশ এবং জাতির কল্যাণে নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

আরও পড়ুন...

হবিগঞ্জ জেলায় ৩য়বার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করলেন বানিয়াচং থানার ওসি এমরান হোসেন

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের নতুন কমিটির সাংবাদিকদের মডেল প্রেসক্লাবের অভিনন্দন

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান

বানিয়াচংয়ে জটিল রোগীদের ৩২ লাখ টাকার চেক প্রদান

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান