জীবন আহমেদ লিটন, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদর আমিরখানী গ্রামে বসবাস এস এস সি পাশ করোয়া জাকিয়া আফরিন মুক্তা। পিতার বাড়ী উপজেলার দুর্গম গ্রাম দৌলতপুরে। ২০০২ সালে হতদিরদ্র হেলাল লস্করের সাথে বিয়ে হয় তার। একে একে ৩ টি কন্যা সন্তান আসে তাদের সংসারে। অভাব অনটনে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বামী। পরিস্থিতি দেখে উদ্যমী মুক্তা নিজের প্রচেষ্ঠায় অর্থ আয়ের স্বপ্ন দেখেন। যেই স্বপ্ন সেই কাজ। বাজার থেকে বিভিন্ন রকমের সুতা কিনে লেগে পড়েন বোতাম তৈরীর কাজে। ২০০৯ সাল থেকে গৃহবধু মুক্তা সুতোর তৈরী বোতাম দেশে বিদেশে রপ্তানি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেন। মুক্তার অভাবের সংসারে হয়ে উঠে উন্নতির সিঁড়ি। অপরদিকে মুক্তা ধীরে ধীরে নীজে বোতাম তৈরী করার পাশাপাশি প্রায় ২ শত বাড়ির আরও ২শ নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেন। প্রতি নারী শ্রমিক মুক্তার সুতোর সাহায্যে বোতাম তৈরী করে মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা ইনকাম করেন। কিন্ত দুবছর আগে করোনার হানায় তার ব্যবসায় ধস নামে। অর্থের অভাবে বোতাম তৈরীর কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তার অধীনে নারী শ্রমিকরাও বোতাম তৈরী না করতে পেরে হতাশ।
এ ব্যাপারে নারী উদ্যোক্তা জাকিয়া আফরিন মুক্তা জানান, ২০০৯ সাল থেকে বোতাম তৈরী করে ওমান ও দুবাই কুরিয়ার সার্ভিস ও আইডিএলসির মাধ্যমে রপ্তানি শুরু করি। দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে বোতাম ক্রয় করেন। বোতামগুলো দেখতে সুন্দর ও টেকসই হওয়ায় প্রচুর চাহিদা বেড়ে যায়। ফলে বিভিন্ন বাড়িতে আরো ২শ নারী শ্রমিক দিয়ে বোতাম তৈরী শুরু করি। ২০১৯ সাল পর্যন্ত বোতাম বিক্রি করে তিনি নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন, সাথে আরও ২শ নারী শ্রমিককে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করেছেন। মুক্তা জানান করোনা হানা দেয়ার পর থেকে ব্যবসায় ধস নেমে পরে। বর্তমানে তাঁর হাতে পুঁজি নেই বললেই চলে। তার দাবী সরকারীভাবে সহযোগিতা পেলে তিনি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন এবং গ্রামে অসচ্ছল নারীদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। ফুটে উঠবে সবার মুখে হাসি।