বানিয়াচংয়ে দখলীয় ঘর অন্যকে লীজ :আশ্রয়হীন না করতে ডিসি বরাবরে ভূমিহীন নারীর আবেদন

জীবন আহমেদ লিটন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী বানিয়াচং উপজেলায় ১০৫ টি পরিবারকে উপহার দিয়েছেন জায়গা ও ঘর। ওই প্রকল্পে একজনকে আশ্রয় দিতে গিয়ে অপর এক ভূমিহীন নারীর নিজ অর্থায়নে তৈরী করা ঘরসহ অপর একজনকে বন্দোবস্ত দিয়ে ওই নারী ৩ সন্তানসহ আশ্রয়হীন হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৪ নং ইউনিয়নের ভট্রপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের মিজানুর রহমানের স্ত্রী সাবেক জাতীয় দলের এথলেটিক সাদিয়া সুলাতানার সাথে। তাকে আশ্রয়হীন না করতে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে গত ৮ সেপ্টেম্বর লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন সাদিয়া। আবেদনে সরজমিনে তদন্তেরও জোর দাবী জাননো হয়েছে। এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ বানিয়াচং মডেল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভূমিহীন সাদিয়া।

জানা যায়, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদর ৪ নং ইউনিয়নের ভট্রপাড়া গ্রামে সরকারী ৪ শতক খাস ভ‚মিতে একটি আধাপাকা টিনশেড ঘর তৈরী করে সন্তান সন্ততি নিয়ে ১০ বছর যাবৎ বসবাস করছেন সাবেক জাতীয় দলের এথলেটিক ভূমিহীন সাদিয়া সুলতানা। কিন্ত সম্প্রতি তার ওই ঘরের অর্ধেক ভেঙ্গে প্রধান্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় অপর একজনকে ২ শতক ভূমিতে ঘর তৈরী করে দেন তৎকালীন বানিয়াচংয়ে ইউএনও মাসুদ রানা। বাকী ২ শতক জায়গা ও ভূমিহীন সাদিয়ার নিজের অর্থায়ে তৈরী করা আধাপাকা ঘরটি তাকে বন্দোবস্ত দেয়ার প্রতিশ্রæতি দেন ইউএনও মাসুদ রানা। কিন্তু বিগত ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধার পর ইউএনও মাসুদ রানা সাদিয়াকে তাঁর বসতঘর থেকে উচ্ছেদের জন্য ভট্রপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে সরজিমেন যান। সেখানে সাদিয়াকে অনেক ডাকাডাকি করলেও আশ্রয়হীন হওয়ার ভয়ে ঘরের দরজা খোলেননি ভূমিহীন সাদিয়া।

এ ব্যাপারে বানিয়াচং ৪ নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেখাছ মিয়া জানান, তিনি সাদিয়া সুলতানার আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি জানান এটা সত্য যে ঘরটি সাদিয়া সুলতানার টাকা দিয়ে তৈরী এবং তিনি বর্তমানে দখলে আছেন। মানবিক বিবেচনায় ঘরটি সাদিয়া সুলতানাকে দেয়া উচিত।

নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ জানান, আমি সবেমাত্র যোগদান করলাম। আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে জানতে পেরেছি আশ্রয়ন প্রকল্পে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানান, ডিসি মহোদয়ের নিকট দাখিলকৃত আবেদনের ব্যাপারে আমার কাছে তদন্ত আসলে সরজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে যিনি পাওয়ার যোগ্য তাকেই ঘরটি দেয়া হবে।

এদিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাদিয়া সুলতানা যে ঘরটিতে বসবাস করছেন সেটির মধ্যে লিংটার পিলার দেয়া আছে। ঘরের বিতরে পুরাতন পল্লীবিদ্যুতের মিটারও সাঁটানো আছে। পুরাতন পাকা ঘরে একটি বারান্দা লাগিয়ে আশ্রয়নের নমুনায় ঘরটিকে তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু ঘরের দক্ষিণ দিক ও ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যায় এটি একটি আধাপাকা পুরনো দালান। অপরদিকে আশ্রয়ন প্রকলেল্পর ঘরগুলোতে পিলার লিংটার দেয়া হয় না। তাই ঘরটি দেখে যে কেহ বুঝতে পারবে শুভঙ্করের ফাঁকি। একটি মহল ঘরটিতে আর্থিক বানিজ্য করেছেন।

কথা হয় ভূক্তভোগী সাদিয়া সুলতানার সাথে। তিনি জানান সাবেক ইউএনও জনাব মাসুদ রানা সাহেব আমাকে অফিসে ডেকে নিয়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বলেছিলেন তোমাকে ঘরটি রেজিস্ট্রি করে দিতে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। কিন্ত পরে দেখলাম এর উল্টো। আমার বানানো ঘর আবেদন করার পরও আমাকে না দিয়ে আমাকে ঘর ছেড়ে যেতে বলেছিলেন ইউএনও সাহেব। তিনি জানান ডিসি মহোদয় একজন নারী। তাই আমি একজন অসহায় নারী হিসেবে উনার কাছে জোর দাবী যে আমকে যেন আশ্রয়হীন না করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

আরও পড়ুন...

বানিয়াচংয়ের খাগড়িতে রাস্তার বেহাল দশা : প্রতিবেদক কবি এম আর ঠাকুর

নবীগঞ্জে পুলিশের পৃথক অভিযানে ৬ পরোয়নাভূক্ত গ্রেফতার

নিরপেক্ষ সরকারসহ বিভিন্ন দাবীতে যুগপৎ আন্দোলন,বাহুবলে বিএনপি’র পথযাত্রা

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান