বানিয়াচংয়ে এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা-মাদক,দাঙ্গা নির্মুলে হৃদয়কে সিলগালা করুন

জীবন আহমেদ লিটন \ হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা পুলিশের আয়োজনে ছান্দ-ও মহল্লা সরদারগণের সাথে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম পিপিএম প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেছেন, দাঙ্গা হাঙ্গামা, মদ-জোয়া, ইয়াবা-গাঁজা সেবন নির্মুলে শুধু সিমান্তেই নয় বরং সকল প্রকার অপরাধ নির্মুলে মানুষের হৃদয়ে সীলগালা করতে চাই। তিনি বলেন মাদক কারবারীরা জেল থেকে বের হয়ে যতই ফুলের মালা নিয়ে শোডাউন করুকনা কেন, জনগণ কিন্তু তাদের চিনে ফেলেছেন। বুক থেকে মাথা পর্যন্ত মালায় ভরে দিলেও ওই মাদক কারবারীকে জনগণ কিন্তু ঘৃণাই করবেন।

বুধবার সকাল ১১ টায় থানা কম্পাউন্ডে অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরান হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেকেন্ড অফিসার এস আই আব্দুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ওই সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা আরও বলেন, ছোটখাট বিষয় গ্রাম্য মাতব্বররা শালিসে নিস্পত্বি করবেন। কিন্তু খুনের মত জঘন্য অপরাধ শালিসে নিস্পত্তি করা যাবেনা। তিনি বলেন, হবিগঞ্জ জেলা ১০ বছর আগের থেকে বর্তমানে সর্বক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করেছে। দাঙ্গা নাই বললেই চলে।

মাদক সম্পর্কে এসপি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে গ্রামের ও ছান্দ সরদারদের সোচ্ছার হতে হবে। মাদক হলো সকল অপরাধের চাবিকাঠি। তাই নিজ নিজ এলাকার মাদক কারবারী ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে সরদারগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে। মাদক কারবারী ও সেবনকারীদের আপনারা সরদারগণ অবশ্যই চিনেন। তাই তাদের সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করে সুন্দর বানিয়াচং বিনির্মাণের আহŸান জানান এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা। এছাড়া স্মার্টফোনগুলো বাচ্চাদের হাতে তুলে না দিতে সকলের প্রতি আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, এই মোবাইল আপনার সন্তানদের লেখাপড়ার মারাত্মক ক্ষতি করে এবং বিভিন্ন অসৎ পথে দাবিত করে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও বানিয়াচং সার্কেল শেখ মোঃ সেলিম বলেন, ১৮৬০ সালে ঢাকার নবাবরা ঢাকাকে ১২ টি অঞ্চলে ভাগ করে ১২ জন সরদার নিয়োগ দিয়েছিলেন। ওই সময়কার সরদারগণ তাদের সততা ও দক্ষতা দিয়ে এলাকার সকল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেন। কালের পরিক্রমায় ১৯৫০ সালে ওই সরদার প্রথা বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্ত শতবছর যাবৎ ধরে বানিয়াচংবাসী সরদার প্রথাকে ধরে রেখেছেন। এটা ভালো একটা কাজ। তবে আপনাদের কাছ থেকে মানুষ ন্যায় বিচার আশা করে। আপনাদের সহায়তায় পুলিশ যেন উপজেলাকে শতভাগ অপরাধমুক্ত রাখতে পারে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ওসি মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেনে, আমি বানিয়াচংয়ে দায়িত্ব নিয়েছি প্রায় ৮ মাস । ওই সময়ে উপজেলায় বড়ধরনের দাঙ্গা হয়েছে মাত্র ১ টি। সরদার, প্রধানগণ ও জনগণের সহযোগিতা না পেলে বিশাল হাওর বাওর বেষ্টিত উপজেলাকে পুলিশ কন্ট্রোল করা দুস্কর হতো। তিনি বলেন, মাননীয় আইজিপি স্যারের আধুনিক পদ্ধতি হচ্ছে বিট পুলিশিং। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদকে বিট পুলিশের মিনি থানা হিসেবে গড়ে তুলা হয়েছে। তাই এ কার্যক্রমের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হচ্ছে।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছান্দ সরদার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মাষ্টার, আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী ইকবাল হোসেন খান, সাবেক ৬ বারের ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দারুজ্জামান খান ধন মিয়া। আরও বক্তৃতা করেন, ওসি তদন্দ প্রজীত কুমার, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ গিয়াস উদ্দিন, মাওলানা হাবিবুর রহমান, এরশাদ আলী, ছান্দ সরদার এনামুল হোসেন খান বাহার, সরদার আবু জাফর, আলাউদ্দিন, আঙ্গুর মিয়া, আব্দুর রশিদ, আনোয়ার হোসেন, মখলিছ মিয়া, এস এম হাফিজুর রহমান, প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

আরও পড়ুন...

বানিয়াচংয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভায় সিদ্ধান্ত:অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

বানিয়াচংয়ে মামলা করায় ফের সন্ত্রাসী পাবেল বাহিনীর হামলা,বৃদ্ধা ফুফু মৃত্যুশয্যায়

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান

বানিয়াচংয়ে পুলিশের অভিযানে যৌতুক মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার