জীবন আহমেদ লিটন : ব্রাক্ষনবাড়িয়ার কসবায় গতবছরের ১২ নভেম্বর এক ভয়ানক রেল দুর্ঘটনায় বানিয়াচংয়ের শিশু আদিবা আক্তার সোহা মারা যায়। এসময় গুরুতর আহত হন শিশুটির পিতা সোহেল মিয়া, মাতা নাজমা আক্তার। শিশু সোহা’র মৃত্যুতে সারাদেশব্যাপী শোকের ছায়া নেমে আসে। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সোহেল মিয়ার ৬ বছরের শিশুপুত্র নাফিস আহমেদ । ঢাকার পিজি হাসপাতালে মৃত্যুসয্যায় থাকা অবস্থায় জীবিত পুত্রের হাত ধরা সোহেল মিয়ার একটি ছবি ভাইরাল হলে দেশব্যাপী নাড়া দেয়। ছবিটি গত বছরের সবচেয়ে আলোচিত ছবি হিসেবে স্থান পায় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায়।
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার তাম্বলীটুলা গ্রামের সোহেল মিয়া স্থানীয় বড়বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় উন্নতি না হলে জীবিকার তাগিদে স্বপরিবারে চট্রগ্রামে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন সোহেল, কিন্ত সোমবার ( ১১ নভেম্বর ২০১৯ ) ভোর পৌনে ৩টার দিকে কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্ত:নগর উদয়ন ও তূর্ণা নিশীথার মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে শিশু আদিবাসহ ১৭ জন নিহত ও আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী।
প্রায় পৌণে একবছর আদিবার পিতা সোহেল ও মা নাজমা চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়িতে চলে আসেন।তাদের চিকিৎসার জন্য দেশ ও বিদেশের হিতৈষী ব্যক্তিরা অর্থনৈতিকভাবে সাহায্যে করেন।সরকারের তরফ থেকে এবং হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান মহোদয়ও তাদের আর্থিক সহায়তা করেন। মানুষের আর্থিক সহায়তা ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সোহেল ও নাজমা পুত্র নাফিসকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেও ফিরেনি ফুটফুটে চঞ্চল আদিবা।
আজ সেই আদিবা আক্তার সোহামনির ১ম মৃত্যুবার্ষিকী। পিতা-মাতার কাছে সন্তানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন কতটা কষ্টের তা শুধু জননী ও পিতাই অনুধাবন করতে পারেন। জানিনা আদিবার পিতা মাতা ও একমাত্র ভাইকে কি ভাষা দিয়ে শান্তনা দেবো। তবুও মহান শ্রষ্ঠার নিকট প্রার্থনা করবো সকলকে যেন সবুর করার তৌফিক দান করেন।
এছাড়া ওইদিনে নিহতদের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
পরিশেষে বলছি ওপারে ভাল থাকিস আদিবা মা মনি। তোকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
লেখক-
জীবন আহমেদ লিটন
সম্পাদক ও প্রকাশক
দৈনিক অনুসন্ধান।
