বানিয়াচংয়ে মানবন্ধনে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ :আইন পরিবর্তন করে নাগুড়ায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চাই

জীবন আহমেদ লিটন :হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়াচং ধান গবেষণা ইনিষ্টিটিউটে স্থাপনের দাবীতে বানিয়াচংয়ে সর্বস্তরের জনতা বিশাল মানবন্ধন করেছেন। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি নাগুড়ায় স্থাপন হলে সরকারের কয়েকশ কোটি টাকা সাশ্রয়ের পাশাপাশি প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে কোলাহল মুক্ত শিক্ষাচর্চার অনন্য বিদ্যাপিঠ হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত পাবে দাবী করে প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করে হলেও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বুকফাটা আর্তনাদ জানিয়েছেন মানব বন্ধনে আশা হাজারো জনতা। এক বক্তা বলেন দাবী আদায়ে প্রয়োজনে বিশাল বানিয়াচং উপজেলা প্রতিটি ঘর থেকে ১ জন করে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় গিয়ে আমরন অনশন করা হবে। তবুও কৃষি ও কৃষক প্রবন এলাকা বানিয়াচং নাগুড়া ধান গবেষণা কেন্দ্রে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন চাই।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় নাগুড়া ধান গবেষণা ইনিষ্টিটিউটের সামনে বিশিষ্ট মুরুব্বী নানু মিয়া সভাপতিত্বে ও ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন বানিয়াচং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার, শচীন্দ্র ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক লতিফ হোসেন, বানিয়াচং রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জীবন আহমেদ লিটন, আওয়ামীলীগ নেতা নাসির উদ্দিন, মুরুব্বী শেখ আজিজুল হক।

 

উপস্থিত ছিলেন, বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরান হোসেন, প্রেসক্লাব সভাপতি এস এম খোকন, রিপোর্টার্স ইউনিটির সেক্রেটারী মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদা, সিনিয়র সহসভাপতি শেখ সফিকুল ইসলাম সফিক, অর্থ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মাসুক যুবলীগ নেতা জনিম উদ্দিন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হওয়ায় শুরুতেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, প্রয়াত জাতীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি ও এডঃ মোঃ আব্দুল মজিদ খান এমপি মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে হবিগঞ্জ জেলাবাসীর পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন এবং তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।

নাগুড়া ধান গবেষণা কেন্দ্রে “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” স্থাপনের কিছু যৌক্তিক দাবি হলো

নাগুড়া কৃষি ফার্মকে কেন্দ্র করেই, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চিন্তা ভাবনা করেন বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এডঃ আব্দুল মজিদ খান এবং ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবী জানিয়ে ছিলেন। সেই দাবির পেক্ষিতেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়েছে মহান জাতীয় সংসদে।

নাগুড়া কৃষিফার্ম এলাকায় “হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” স্থাপন করা হউক এটা হবিগঞ্জ জেলাবাসীর দাবী এবং এখানে প্রায় ১০০ একরের উপরে সরকারি খাস জমি ও হাজার হাজার একর কৃষি-অকৃষি জমি রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও বিদ্যমান। ইচ্ছে করলে এখনই শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব।একটি তৈরি জায়গা থাকতে নতুন করে আরেকটি জায়গা তৈরি করে সরকারের শতশত কোটি টাকা অপচয় করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

নাগুড়া ফার্ম এলাকা ৯টি উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত ভাল, যানজট ও কোলাহলমুক্ত, মনোরম পরিবেশ হওয়ার কারণে জায়গাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপযুক্ত স্থান। তাছাড়া হবিগঞ্জ শহরের অতি সন্নিকটে। এর চেয়ে উপযুক্ত জায়গা হবিগঞ্জ জেলায় আর কোথাও নেই।

 

অপরদিকে অত্র এলাকায় জমির দাম খুবই কম। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমির প্রয়োজন পড়লেও শহরের তুলনায় প্রায় ২০ গুণ কম খরচে জমি ক্রয় করা সম্ভব। এখানে প্রাথমিক গবেষণা চালানোর মতো যাবতীয় অবকাঠামো ও ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে। যানজট কোলাহলমুক্ত পরিবেশের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শহরের বাহিরেই স্থাপন করা হয়েছে।

 

উপমহাদেশের প্রথম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টিও ১৯৬১ সালে শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হয়েছিল।

পরিবেশ প্রকৌশলী বাবু অশোক কুমার দাশ পিংকু বলেন, “অবশ্যই শহর থেকে কিছুটা দূরে যানজট ও কোলাহলমুক্ত স্থানে হওয়া কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয় হওয়া উচিত। হবিগঞ্জ শহর যেভাবে চতুর্দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে সেটি বিবেচনায় নিলে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একমাত্র উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে নাগুড়া কৃষি গবেষণাগার কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য যে রকম অনুকূল পরিবেশ দরকার নাগুড়া ফার্মে সেরকম পরিবেশ বর্তমানে বিরাজমান। তাছাড়া সেখানে খাস জমি, অবকাঠামো ও গবেষণাগার এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান।

বক্তারা আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় রাষ্ট্রপতির নিকট আকুল আবেদন, আমাদের প্রাণের দাবি হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করে ২০১৪ সালের জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উত্থাপিত এবং প্রস্তাবিত নাগুড়া কৃষি ফার্মেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে হবিগঞ্জবাসীর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করুন।

 

মানবন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, রাখাল দাশ, আবজাল হোসেন তালুকদার, আব্দুল্লাহ, কামাল মিয়া, অসীম, এস এম কাশেম, সালেহ আহমেদ, মোফাজ্জল হোসেন, শেখ আলাউদ্দিন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

আরও পড়ুন...

লাখাইয়ে বিশ্বজয়ী  হাফেজ বশির আহমেদকে বিশাল নাগরিক সংবর্ধনা

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান

এক বছরে বাংলাদেশে ৭২টির বেশি সোলার পাওয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন হুয়াওয়ের

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান

মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর বানিয়াচংয়ে নিরবিচ্ছিন্ন বিদুৎ : প্রসংশা কুড়াচ্ছেন এমপি রুয়েল

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান