শিক্ষা লাভ করলে হবেন আলোকিত মানুষ ॥ স্বাক্ষরতা দিবসে ইউএনও মাসুদ রানা

জীবন আহমেদ লিটন ॥ আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। “কোভিড-১৯ সংকট ঃ স্বাক্ষরতা শিক্ষায় পরিবর্তনশীল -শেখানো কৌশল এবং শিক্ষাবিদদের ভূমিকা ” এ বিষয়টিকে সামনে রেখে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় স্থানীয় উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ওই আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা।
ইউএনও মাসুদ রানা তার বক্তব্যে বলেন, বানিয়াচং একটি বিশাল বড় গ্রাম। তাই এ গ্রামের মানুষ সর্বক্ষেত্রে বড় হতে হবে। আর বড় হওয়ার সর্বোচ্চ উপায় হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা লাভ করলে আপনি আলোকিত মানুষ হতে পারবেন। রাষ্ট্রের সকল নাগরিক শিক্ষা লাভ করে আলোকিত হলে গোটা দেশ আলোকিত হবে। ইউএনও আরও বলেন, বিশ^ অর্থনীতিতে ১১ টি দেশ ভূমিকা রাখবে। এরমধ্যে বাংলাদেশের নামও রয়েছে। এটা আমাদের গর্বের বিষয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে ২১ লাখ নিরক্ষর মানুষকে স্বাক্ষর জ্ঞান দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বানিয়াচং উপজেলায় প্রতিটি ক্লাষ্টারের অধীনে ১০ ভাগ করে স্বাক্ষরতার হার বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। যে ক্লাষ্টারে ৭০ ভাগ রয়েছে সেখানে হবে ৮০ ভাগ।

ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, করোনার কারনে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়া রোধে অনলাইন ক্লাসকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনলাইন ক্লাস প্রদানকারী শিক্ষকদের বাছাই করে পুরস্কৃত করছে বানিয়াচং প্রশাসন। এছাড়াও বানিয়াচংয়ে অনলাইন পাঠদান কার্যক্রমের জন্য লাইভ স্টুডিও স্থাপনের কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, নৌকায় চড়লে মানুষ লাইফ জ্যাকেট পরিধান করেন। তেমনি মানুষের জীবনকে আলোকিত করতে লাইফ সাপোর্ট হিসেবে আপনাদের সন্তানদের স্বাক্ষর জ্ঞান ও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহন করার পর প্রতিটি স্তরের মানুষকে স্বাক্ষর জ্ঞান দিতে বিপুল পরিমান বরাদ্দ দিয়েছিলেন। গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় গড়ে তোলা হয়েছিল রাত্রীকালীন পাঠশালা।

উপজেলা চেয়ারম্যান আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের তরফ থেকে ২১ লাখ মানুষকে স্বাক্ষর জ্ঞান দেয়ার যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে মহতী কাজটি বানিয়াচং উপজেলায় বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন ইউএনও মহোদয়। তিনি বানিয়াচংকে নান্দনিক উপজেলায় রূপান্তরিত করতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন। এজন্য তাকে আমি সাদুবাদ জানাই। আমরা যারা জনপ্রতিনিধি আছি সবসময় সহযোগিতার হাত প্রসারিত থাকবে। তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন আসুন সরকারের শতভাগ স্বাক্ষরতা আন্দোলনে শরীক হয়ে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসিল্যান্ড ইফফাত আরা জামান উর্মি বলেন, ইউনেস্কো ১৯৬৬ সালে সবার জন্য স্বাক্ষরতা কার্যক্রম শুরু করে ৮ ই সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সাল থেকে তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর সরকার দিবসটিতে গুরুত্বের সহিত পালন শুরু করা হয়। তাই আসুন ইউনেস্কো ঘোষিত সবার জন্য স্বাক্ষরতা নিশ্চিত করতে সকলে মিলে কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরন করি।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার। অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন. কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এনামুল হক, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাউছার শোকরানা, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাসিবুল ইসলাম, কাজী মাওলানা আতাউর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি গোলাম আকবর, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারী আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন, পিআইও মলয় কুমার দাস, বানিয়াচং রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জীবন আহমেদ লিটন, সেক্রেটারী মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর রেজা প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

আরও পড়ুন...

কৃষকের জন্য সুখবর :শুধু লটারি নয় আগে আসলে আগেই গুদামে ধান দিতে পারবেন

সাংবাদিক রুজিনাকে নির্যাতনকারীদের কঠিন শাস্তির দাবী দৈনিক অনুসন্ধানের

বানিয়াচং মডেল প্রেসক্লাবের চা-চক্রে জাতির কল্যানে লিখনির সিদ্ধান্ত