ভালো নেই ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষকরা

শিব্বির আহমদ আরজু, বানিয়াচং : প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস কোভিট- ১৯ এর কারণে প্রায় ২ মাস যাবত বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে নয় সত্যিকারের মানুষ গড়ার দ্বীনি প্রতিষ্ঠান ক্বওমী মাদ্রাসাগুলোও। যখন বার্ষিক পরীক্ষা সমাগত তখনি বাংলাদেশে হানা দেয় করোনাভাইরাস।

দেশের মানুষের প্রাণ রক্ষায় ২৫ শে মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন সরকার। এরপর থেকেই বেকার রয়েছেন ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষকরা। যখন থেকে মাদ্রাসা বন্ধ, তখন থেকেই কার্যত তাদের আয়-উপার্জনও বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিধি নিষেধের কারণে মসজিদগুলোতে খতমে তারাবীর নামাজও অধিকাংশ মসজিদে হচ্ছে না। সবদিক মিলিয়ে নিম্ন আয়ের ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। না পারছেন লোক লজ্জার ভয়ে ত্রাণ নিতে, না পারছেন চোখবুঝে সহ্য করতে।

তাছাড়া সম্প্রতি সরকার কর্তৃক বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়াকে (ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড) ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা প্রণোদনা দিলেও সেই টাকা দেওবন্দ মাদ্রাসার শিক্ষানীতির সাথে পরিপন্থি হওয়ায় গ্রহণ না করে ফিরিয়ে দিয়েছে বেফাক বোর্ড। এ নিয়ে বেফাকের নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোন ধরণের দ্বি-মত নেই।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ১শ’ ক্বওমী মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২শ’৫০ জন শিক্ষক দরিদ্র রয়েছেন। তারা ২ মাস যাবত বেতন পাচ্ছেন না। সামনে ঈদ, এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন সেই নি¤œ আয়ের শিক্ষকরা। কবে নাগাদ পরিবেশ অনুকূলে আসবে তাও দিনক্ষণ ঠিক নেই।

এ ব্যাপারে বানিয়াচং নূরে মদিনা মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা শায়খ সিরাজুল ইসলাম জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে মাদ্রাসাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরীক্ষার ফিস থেকেও শিক্ষকরা বঞ্চিত। সেই সাথে বেতন নেই ২ মাস যাবত। পবিত্র রমজানে অনেক শিক্ষক তারাবীর নামাজ, ক্বেরাত প্রশিক্ষণ দিতেন সেটিও বন্ধ। সবদিক মিলিয়ে ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষকরা ভালো নেই। সামনে পবিত্র ঈদ। যেখানে দৈনন্দিন জীবন যাপন করা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে, সেখানে সন্তানদের জন্য কেনাকাটা করা দুঃস্বপ্নের মতোই।

বিশিষ্ট সাংবাদিক মখলিছ মিয়া জানান, ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষকরা পবিত্র কোরআন এবং হাদীস দরস দিয়ে যান পান তা দিয়েই সংসার চালাচ্ছেন। তারপর করোনা ভাইরাসের কারণে ২ মাস যাবত তাদের বেতন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে তাদের জীবনমান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে সম্মানীত শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তশালীদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

বানিয়াচং বেফাক শিক্ষা বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক ও জামেয়া দারুল কোরআন টাইটেল মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা গোলাম কাদির বলেন, বেফাক বোর্ড থেকে অসহায় শিক্ষকদের তালিকা করা হচ্ছে। বোর্ডের সামর্থের আলোকে চেষ্টা চলছে সারা বাংলাদেশের ক্বওমী মাদ্রাসার অসহায় শিক্ষকদের সহযোগিতা করতে।

          

Print Friendly, PDF & Email

আরও পড়ুন...

সিলেট অঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে হবে-বানিয়াচংয়ে অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান

খেলাধূলা সুন্দর সমাজ বিনির্মানের অন্যতম মাধ্যম-এমপি রুয়েল

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান

এ বিজয় শেখ হাসিনা এবং জনতার বিজয়:বানিয়াচংয়ে এমপি রুয়েল

অনলাইন ডেস্ক, দৈনিক অনুসন্ধান